Surah Al Hajj Tafseer
Tafseer of Al-Hajj : 39
Saheeh International
Permission [to fight] has been given to those who are being fought, because they were wronged. And indeed, Allah is competent to give them victory.
Tafsir Abu Bakar Zakaria
Tafseer 'Tafsir Abu Bakar Zakaria' (BN)
[১] ইবনে আব্বাস বলেন, এ আয়াত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার সাহাবীদের ব্যাপারে নাযিল হয়েছে। যখন তাদেরকে মক্কা থেকে বের করে দেয়া হয়। [ইবন কাসীর] অধিকাংশ মনীষী বলেছেন, জিহাদের ব্যাপারে এটিই প্রথম নাযিলকৃত আয়াত। ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণিত, যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মক্কা থেকে বের করে দেয়া হলো, তখন আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, এরা অবশ্যই ধ্বংস হবে, তারা তাদের নবীকে বের করে দিয়েছে। ‘ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন’ তখন এ আয়াত নাযিল হয়। আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, তখন আমি বুঝতে পারলাম যে, যুদ্ধ হতে যাচ্ছে। আর এটিই প্রথম যুদ্ধের আয়াত। [তিরমিয়ীঃ ৩১৭১; মুসনাদে আহমাদঃ ১/২১৬] এর আগে মুসলিমদেরকে যুদ্ধ করতে নিষেধ করা হয়েছিল। তাদেরকে সবর করতে নির্দেশ দেয়া হচ্ছিল। [মুয়াসসার]
[২] এদের উপর যে ধরনের অত্যাচার করে বের করে দেয়া হয় তা অনুমান করার জন্য একটি ঘটনা থেকেই বোঝা যায়: সুহাইব রুমী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু যখন হিজরত করতে থাকেন তখন কুরাইশ বংশীয় কাফেররা তাঁকে বলে, তুমি এখানে এসেছিলে খালি হাতে। এখন অনেক ধনী হয়ে গেছো। যেতে চাইলে তুমি খালি হাতে যেতে পারো। নিজের ধন-সম্পদ নিয়ে যেতে পারবে না। অথচ তিনি নিজে পরিশ্রম করেই এ ধন-সম্পদ উপার্জন করেছিলেন। কারো দান তিনি খেতেন না। ফলে বেচারা হাত-পা ঝেড়ে উঠে দাঁড়ান এবং সবকিছু ঐ জালেমদের হাওয়ালা করে দিয়ে এমন অবস্থায় মদীনায় পৌঁছেন যে, নিজের পরণের কাপড়গুলো ছাড়া তাঁর কাছে আর কিছুই ছিল না। [ইবন হিব্বানঃ ১৫/৫৫৭] মক্কা থেকে মদীনায় যারাই হিজরত করেন তাদের প্রায় সবাইকেই এ ধরনের যুলুম-নির্যাতনের শিকার হতে হয়। ঘর-বাড়ি ছেড়ে চলে আসার সময়ও যালেমরা তাদেরকে নিশ্চিন্তে ও নিরাপদে বের হয়ে আসতে দেয়নি। মোটকথাঃ মক্কায় মুসলিমদের উপর কাফেরদের নির্যাতন চরম সীমায় পৌঁছে গিয়েছিল। এমন কোন দিন যেত না যে, কোন না কোন মুসলিম তাদের নিষ্ঠুর হাতে আহত ও প্রহৃত হয়ে না আসত। মক্কায় অবস্থানের শেষ দিনগুলোতে মুসলিমদের সংখ্যাও যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছিল। তারা কাফেরদের যুলুম ও অত্যাচার দেখে তাদের মোকাবেলায় যুদ্ধ করার অনুমতি চাইতেন। কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জবাবে বলতেনঃ সবর কর। আমাকে এখনো যুদ্ধের অনুমতি দেয়া হয়নি। দীর্ঘ দশ বছর পর্যন্ত এমনিতর পরিস্থিতি অব্যাহত রইল।
[৩] অর্থাৎ তিনি তাঁর মুমিন বান্দাদের বিনা যুদ্ধে সাহায্য করতে সক্ষম। কিন্তু তিনি চান তাঁর বান্দারা তাদের প্রচেষ্টা তাঁর আনুগত্যে কাজে লাগাবে। যেমন অন্য আয়াতে এসেছে, “অতএব যখন তোমরা কাফিরদের সাথে যুদ্ধে মুকাবিলা কর তখন ঘাড়ে আঘাত কর, অবশেষে যখন তোমরা তাদেরকে সম্পূর্ণরূপে পর্যুদস্ত করবে তখন তাদেরকে মজবুতভাবে বাঁধ; তারপর হয় অনুকম্পা, নয় মুক্তিপণ। যতক্ষণ না যুদ্ধ এর ভার (অস্ত্র) নামিয়ে না ফেলে। এরূপই, আর আল্লাহ্ ইচ্ছে করলে তাদের থেকে প্রতিশোধ নিতে পারতেন, কিন্তু তিনি চান তোমাদের একজনকে অন্যের দ্বারা পরীক্ষা করতে। আর যারা আল্লাহ্র পথে নিহত হয় তিনি কখনো তাদের আমলসমূহ বিনষ্ট হতে দেন না। অচিরেই তিনি তাদেরকে পথনির্দেশ করবেন এবং তাদের অবস্থা ভাল করে দিবেন। আর তিনি তাদেরকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে, যার পরিচয় তিনি তাদেরকে জানিয়েছিলেন।” [সূরা মুহাম্মদঃ ৪-৬] আর এজন্যই ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, তিনি অবশ্যই সে সাহায্য করেছেন। [ইবন কাসীর] জিহাদ তো তিনি তখনই ফরয করেছেন যখন তার উপযোগিতা দেখা গিয়েছিল। কেননা, তারা যখন মক্কায় ছিল তখন মুসলিমদের সংখ্যা ছিল কম। যদি তখন জিহাদের কথা বলা হত, তবে তাদের কষ্ট আরও বেড়ে যেত। আর এজন্যই যখন মদীনাবাসীরা আকাবার রাত্রিতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাতে বাই‘আত বা শপথ নিয়েছিল, তারা ছিল আশি জনেরও কিছু বেশী। তখন তারা বলেছিল, হে আল্লাহ্র রাসূল! আমরা কি উপত্যকাবাসীদের উপর আক্রমন করবো না? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমাকে এ জন্য নির্দেশ দেয়া হয়নি। তারপর যখন তারা সীমালঙ্ঘন করল, আর তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তাদের কাছ থেকে বের করে দিল এবং তাকে হত্যা করতে চাইল। আর সাহাবায়ে কিরামের কেউ হাবশাতে কেউ মদীনাতে হিজরত করল। তারপর যখন মদীনাতে তারা স্থির হলো এবং তাদের কাছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসে পৗঁছালেন, তারা তার চারপাশে জমা হলেন। তাকে সাহায্য করার জন্য দাঁড়িয়ে গেলেন। আর তাদের জন্য একটি ইসলামী দেশ হলো, একটি কেল্লা হলো যেখানে তারা আশ্রয় নিতে পারে, তখনই আল্লাহ্ শক্ৰদের সাথে জিহাদ করার অনুমতি দিলেন। [ইবন কাসীর]
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings