Surah Al Hajj Tafseer
Tafseer of Al-Hajj : 1
Saheeh International
O mankind, fear your Lord. Indeed, the convulsion of the [final] Hour is a terrible thing.
Tafsir Fathul Mazid
Tafseer 'Tafsir Fathul Mazid' (BN)
নামকরণ:
উক্ত সূরাটিতে হজ্জ সংক্রান্ত বিধি-বিধান আলোচনা করা হয়েছে বিধায় এ সূরার নামকরণ করা হয়েছে সূরাতুল হজ্জ। এ সূরাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সূরা। সূরার শুরুতে কিয়ামতের ভয়াবহতা, শয়তানের অনুসরণের খারাপ পরিণতি, মানব সৃষ্টির প্রক্রিয়া এবং যাদের দুনিয়া ও আখিরাত উভয়টা ক্ষতিগ্রস্ত তাদের বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে। সকল সৃষ্টি আল্লাহর ইবাদত করে, কিন্তু একশ্রেণির মানুষ সেসব সৃষ্টির ইবাদত করে, মূলত তারা নির্বোধ, ইবরাহীম (عليه السلام) ও তাঁর সন্তান ইসমাঈল (عليه السلام) -এর কাবা নির্মাণ ও হজ্জের ঘোষণা এবং কুরবানীর বিধান নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়াও সূরার শেষের দিকে যারা অন্যায়ভাবে নির্যাতিত হবে তাদের জন্য জিহাদ করা, কিসসাতুল গারানীক সম্পর্কে সতর্ক করা এবং যারা আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া অন্যের ইবাদত করে তাদের দৃষ্টান্ত বর্ণনা করা হয়েছে।
১-২ নং আয়াতের তাফসীর:
সূরার প্রারম্ভিকাতেই আল্লাহ তা‘আলা পৃথিবীর সকল মানুষকে সতর্ক করে বলছেন, তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ভয় কর। আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করার মাধ্যম হল তাঁর নির্দেশাবলী পালন করা এবং নিষেধাজ্ঞা থেকে বিরত থাকা। কারণ কিয়ামতের প্রকম্পন ভয়াবহ জিনিস। মানুষের মাঝে কঠিন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়বে। আতঙেঙ্কর ভয়াবহতা পরের আয়াতে উল্লেখ করে আল্লাহ তা‘আলা বলেন: দুগ্ধদানকারিণী মা তার দুগ্ধপোষ্য শিশুর কথা ভুলে যাবে, গর্ভবতী নারীর কখন গর্ভপাত হবে বুঝতেও পারবে না, এমনকি মানুষ নেশাগ্রস্ত হলে তার অবস্থা যেমন হয় কিয়ামতের ভয়াবহতা দেখে তাদের অবস্থা সেরূপ হবে। কিয়ামতের ভয়াবহতা অন্যত্র তুলে ধরে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(اِذَا زُلْزِلَتِ الْاَرْضُ زِلْزَالَھَاﭐﺫ وَاَخْرَجَتِ الْاَرْضُ اَثْقَالَھَاﭑﺫ وَقَالَ الْاِنْسَانُ مَا لَھَاﭒﺆ یَوْمَئِذٍ تُحَدِّثُ اَخْبَارَھَا)
“যখন পৃথিবীকে তার কম্পনে প্রকম্পিত করা হবে, এবং যখন পৃথিবী তার বোঝা বের করে দেবে, আর মানুষ বলবে, এর কী হল? সেদিন সে তার বৃত্তান্ত বর্ণনা করবে।” (সূরা যিলযাল ৯৯:১-৪)
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন:
(وَّحُمِلَتِ الْأَرْضُ وَالْجِبَالُ فَدُكَّتَا دَكَّةً وَّاحِدَةً لا - فَيَوْمَئِذٍ وَّقَعَتِ الْوَاقِعَةُ)
“আর পৃথিবী ও পর্বতমালাকে উত্তোলন করা হবে এবং একই ধাক্কায় চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দেয়া হবে। সেদিন যা সংঘটিত হওয়ার তা অর্থাৎ কিয়ামত সংঘটিত হয়ে যাবে।” (সূরা হাক্কাহ ৬৯:১৪-১৫)
আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামতের দিন বলবেন: হে আদম! তিনি বলবেন: হে আমাদের প্রতিপালক! আমি আপনার দরবারে হাজির আছি। অতঃপর উচ্চস্বরে ঘোষণা করা হবে, আল্লাহ তা‘আলা তোমাকে নির্দেশ দিচ্ছেন যে, তুমি তোমার সন্তানদের মধ্য যারা জাহান্নামী তাদেরকে বের কর। তিনি জিজ্ঞেস করবেন: হে আমার প্রতিপালক! কত হাজারের মধ্যে থেকে কত জনকে? তিনি উত্তরে বলবেন: প্রতি হাজারের মধ্যে নয়শ নিরানব্বই জনকে। ঐ সময় গর্ভবতী নারীর গর্ভপাত হয়ে যাবে এবং স্তন্যদাত্রী তার দুগ্ধপোষ্য শিশুকে ভুলে যাবে। আর শিশুরা হয়ে যাবে বৃদ্ধ। মানুষকে সেদিন দেখে মাতাল মনে হবে যদিও তারা নেশাগ্রস্ত নয়। আল্লাহ তা‘আলার কঠিন শাস্তির কারণেই তাদের এ অবস্থা হবে। এ কথা শুনে সাহাবীদের চেহারা বিবর্ণ হয়ে যায়। তখন রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে বলেন: ইয়া‘জূজ-মা‘জুজের মধ্য হতে নয়শত নিরানব্বই জন (জাহান্নামী) এবং তোমাদের মধ্যে হতে একজন (জান্নাতী)। তোমরা লোকদের মধ্যে এমনই যেমন সাদা রঙের গরুর কয়েকটি কালো লোম এর পার্শ্বদেশে থাকে বা কালো রঙের গরুর কয়েকটি সাদা লোম এর পার্শ্বদেশে থাকে। তারপর তিনি বলেন: আমি আশা করি যে, সমস্ত জান্নাতীদের মধ্যে তোমরাই হবে এক চতুর্থাংশ। (বর্ণনাকারী বলেন) আমরা তখন আল্লাহু আকবার বলে তাকবীর দিলাম। আবার বললেন: জান্নাতীদের মধ্যে তোমরাই হবে এক তৃতীয়াংশ। এবারও আমরা তাকবীর ধ্বনি করলাম। এরপর তিনি আবার বললেন: তোমরাই হবে জান্নাতীদের অর্ধাংশ। আমরা এবারও তাকবীর ধ্বনি পাঠ করলাম। (সহীহ বুখারী হা: ৪৭৪১, ৬৫৩০, ৭৪৮৩, সহীহ মুসলিম হা: ২০২২) কিয়ামতের ভয়াবহতা সম্পর্কিত অসংখ্য আয়াত রয়েছে; যেমন সূরা ওয়াকিয়ার ৪-৫ নং আয়াত, সূরা নাযিয়াতের ৬-৮ নং আয়াত, সূরা মু’মিনের ৩২-৩৩ নং আয়াত, সূরা আহযাবের ১০-১১ নং আয়াত ইত্যাদি । কিয়ামতের এ ভয়াবহ প্রকম্পন কখন হবে তা নিয়ে কয়েকটি মত রয়েছে। কেউ বলেছেন মানুষ হাশরের উদ্দেশ্যে কবর থেকে উত্থিত হওয়ার পূর্বে। কেউ বলেছেন, শেষ যুগে। আবার কেউ বলেছেন হাশরের ময়দানে ইত্যাদি। তবে অধিকাংশ বিদ্বান বলেছেন কবর থেকে উঠে হাশরের ময়দানে উপস্থিত হওয়ার পর। বলা হয়, কিয়ামতের দিন তো কোন স্তন্যদানকারী থাকবে না এবং কোন গর্ভবতী মহিলাও থাকবে না, তাহলে কিভাবে আয়াতে তা বলা হল। উত্তর, এটা একটি উপমা দিয়ে বলা হয়েছে যে, সেদিন এরূপ কোন মহিলা থাকলে তাদের অবস্থা অনুরূপ হতো। অথবা সেদিন এরূপ মহিলা বানানো হবে।
সুতরাং কিয়ামতের এরূপ ভয়াবহ অবস্থা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য সঠিক ঈমান ও সৎ আমল নিয়ে যেতে হবে। কিয়ামতের ভয়াবহতা মু’মিনের দুশ্চিন্তার কারণ হবে না। তারা নিরাপদে সকল বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করতে সক্ষম হবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. সর্বাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত অন্য কাউকে ভয় করা যাবে না।
২. কিয়ামতের দিনের অবস্থা হবে খুবই ভয়াবহ।
৩. আদম সন্তানের হাজারে একজন জান্নাতে যাবে।
৪. সমস্ত জান্নাতবাসীর অর্ধেক হবে উম্মাতে মুহাম্মাদী হতে।
৫. কিয়ামতের ভয়াবহতা থেকে বাঁচতে হলে ঈমান আনয়ন অতঃপর বেশি বেশি সৎ আমল করতে হবে।
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Be our beacon of hope! Your regular support fuels our mission to share Quranic wisdom. Donate monthly; be the change we need!
Are You Sure you want to Delete Pin
“” ?
Add to Collection
Bookmark
Pins
Social Share
Share With Social Media
Or Copy Link
Audio Settings